অন্য উচ্চতায় বরুন দেওয়ান

294
Advertisement

 

:দীপ্ত হান্নান: জীবন যৌবন ঢেলে দিয়েছেন ফুটবলের জন্য। দাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন ঘরের মাঠে, বিদেশের ময়দানে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের এখনো রোল মডেল। নব্বই দশক থেকেই পাহাড়ের ফুটবল বলতেই বরুন দেওয়ান। কিন্তু, কোথায় যেন আক্ষেপ, শুণ্যতা বা অপ্রাপ্তি। দেশের জন্য খেলেছেন কিন্তু স্বীকৃতি অধরাই থেকে গেল। অবশেষে সেই আক্ষেপ, সেই শুণ্যতা পরিপুর্ণতায় রুপ নিল। বুধবার (১১ মে) বরুন দেওয়ানের হাতেই উঠল খেলোয়াড়ী জীবনের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি জাতীয় ক্রীড়া পুরষ্কার।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের হয়ে সাবেক জাতীয় ফুটবলার বরুন দেওয়ান এ পুরষ্কার গ্রহন করেন। এরআগে চিংহ্লা মং চৌধুরী মারী (যার নামে রাঙ্গামাটি স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে) মরনোত্তর এ পুরস্কার পান।

বুধবার দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি ৮৫ জন গুনী ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সাথে বরুন দেওয়ানের হাতেও উঠেছে । প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্থিত থেকে এ পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন।

পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে পেয়েছেন একটি ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, এক লাখ টাকার চেক এবং একটি সম্মাননাপত্র।

চলতি বছর একসঙ্গে আট বছরের (২০১৩-২০২০) জন্য ৮৫ জনের নাম ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

ফুটবলার বরুন দেওয়ানের ফুটবলে হাতেখড়ি শুরু ১৯৮০ সালে। শাহ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক ও কোচ আবুল বাশার চৌধুরীর হাত ধরে ফুটবলে পদার্পন। এরপর জেলা ফুটবল ও জাতীয় ফুটবলে পা রাখা। ১৯৮৬ সালে মুক্তিযোদ্ধার হয়ে ঢাকার ফুটবলে যাত্রা শুরু, ৯৯ সালে ব্রাদার্সের হয়ে শেষ। মাঝখানে খেলেছেন দেশ সেরা ক্লাব আবাহনী, মোহামেডান ও জাতীয় দলে। এরই মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গেছেন বিশ্বের ১৮টি দেশে। আন্তজার্তিক অঙ্গনে নিজের ক্যারিয়ারে সেরা সাফল্য ১৯৯৫ সালে মায়ানমারে অনুষ্ঠিত চারজাতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। ফুটবল থেকে অবসরে গিয়ে নিজেকে রাঙ্গামাটি ক্রীড়াঙ্গনের সাথে যুক্ত করে নেন। ২০০৬-১০ সালে জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ও ২০১০-১৪ এবং ২০১৪-১৮ সালে একই সংস্থায় টানা দুবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতির দায়িত্বে আছেন। গত দুই মেয়াদে ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে বাফুফের কাউন্সিলর।ৎ

জাতীয় ক্রীড়া পুরষ্কার পাওয়ায় উচ্ছসিত বরুন দেওয়ান সিইচটি স্পোর্টসকে জানান, ফুটবলের জন্য সারাজীবন যা দিলাম, তার স্বীকৃতি, জীবিত অবস্থায় দেখে যেতে পারব, তা কখনও কল্পনাও করিনি। আমি অভিভুত উচ্ছসিত। সম্মান, অর্জন শুধু আমার নয়, বৃহত্তর পার্বত্যবাসীর।